1 0
Read Time16 Minute, 28 Second

পর্ব ১

হিউস্টন থেকে রওনা দিয়ে আমরা রাত দশটা নাগাদ নিউ ইয়র্ক সিটির কুইন্সে অবস্থিত লাগুয়ার্দিয়া বিমানবন্দরে নামলাম। নামার পর প্রথম কাজই হল দুজনের জন্য দুটো মেট্রোকার্ড কেনা। কার্ডের বিভিন্ন প্যাকেজ আছে, যেমন সাপ্তাহিক, মাসিক, বাৎসরিক। আমাদের জন্য সাতদিনের আনলিমিটেড প্যাকেজই উপযুক্ত মনে হল। তাই তেত্রিশ ডলার দিয়ে প্যাকেজটা কিনলাম। কার্ড কেনার জন্য লাগলো এক ডলার করে। অর্থাৎ মাথাপিছু চৌত্রিশ ডলার। এই কার্ড দিয়ে সাতদিনের মধ্যে অসংখ্যবার বাসে আর ট্রেনে চড়া যাবে। তারপর এলাম বিমানবন্দরের বাস স্টপে। এখান থেকে এম সিক্সটি-এসবিএস নামের যে বাস ছাড়ে, সেটায় চড়ে হারলেম পর্যন্ত যেতে হবে। সেখান থেকে সাবওয়ে ট্রেন ধরে ব্রংক্স। সেখানেই এয়ারবিএনবি। মিনিট দশেক অপেক্ষার পর বাস এলো। চড়ার পর দেখি আর্টিকুলেটেড বাসটা পুরো ভর্তি। বেশীরভাগই কৃষ্ণাঙ্গ এবং হিস্পানিক যাত্রী। দেখে সেন্ট লুইসের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেলো। সেখানকার বাস আর ট্রামে বেশীরভাগই থাকতো কৃষ্ণাঙ্গ যাত্রী। ওরা খুব গাঁজা খেত। তাই স্টপেজগুলো থাকতো গাঁজার গন্ধে ভরা। রাতের বাসে চড়লে টের পেতাম আসল মজা। তখন বাসের ভিতরেই তীব্র গাঁজার গন্ধ থাকতো। এতোই তীব্র যে বমি এসে যেতো। অবশ্য সকালের ট্রিপ মারার আগে বাসগুলো পরিষ্কার করতো বলে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গন্ধ থাকতো না। নিউ ইয়র্কে এসেও সেন্ট লুইসের ওই কাহিনীর পুনরাবৃত্তি দেখবো নাকি?

আধা ঘণ্টা পর বাস নামিয়ে দিলো ম্যানহাটনের হারলেমে। এখান থেকে সাবওয়ে ধরে যেতে হবে ব্রংক্সে। আমরা বাস স্টপেজ থেকে সাবওয়ে স্টেশনে আসতে আসতে হারলেমের চেহারা খানিকটা দেখতে পেলাম। এই এলাকা বিখ্যাত কৃষ্ণাঙ্গদের এলাকা হিসেবে। একই কারণে অনেকে এটাকে অনিরাপদও বলে থাকে। রাস্তাঘাট নোংরা, জীর্ণ পোশাক পরা মানুষজন হাঁটাহাঁটি করছে, নেশাগ্রস্তরা ঢুলতে ঢুলতে রাস্তা পার হচ্ছে। স্টেশনের ভেতরে ঢুকেও কেমন জানি ভয় ভয় করতে লাগলো। এর মধ্যে শুরু হল ঝিরঝিরে বৃষ্টি। কোন ট্রাম ধরে ব্রংক্সের সেজউইক এভেনিউতে যাওয়া যাবে, এটাই বুঝতে পারছি না। অনেকক্ষণ পর যখন বুঝলাম তখন দেখি ট্রাম থেকে নামার পরও দশ মিনিট হাঁটতে হবে। এরপর পৌঁছাব বাসায়। এখনই বাজে রাত সোয়া এগারোটা। এত রাতে অচেনা জায়গায় হাঁটাহাঁটির ঝামেলায় না গিয়ে উবার ধরাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তাই উবার ডেকে স্টেশনের সামনের ফুটপাতে এসে দাঁড়ালাম। একজন কালো নারী এসে বলল, “আমার ডায়াবেটিস। কিন্তু ইনসুলিনের ইনজেকশনটা বাসায় রেখে এসেছি। দয়া করে ইনসুলিন কেনার জন্য পাঁচটা ডলার দাও।” আমরা “দুঃখিত, খুচরা নেই” বলে অন্যদিকে তাকালাম। নারীটা “ফাকিং বিচ!” বলে অন্যদিকে হাঁটা ধরল।

দশ মিনিট লাগলো উবার আসতে। চালকের চাপা দাড়ি, বড়সড় দেহ আর স্পিকারে চালানো “ওয়ে চাক দে পাট্টে!” গান শুনে বুঝলাম পাঞ্জাবী না হয়ে যায়ই না। জিজ্ঞেস করলাম কোথা থেকে এসেছে। বলল, ভারত। যখন বললাম আমরা বাংলাদেশ থেকে এসেছি, শুরু হয়ে গেলো আড্ডা। টেক্সাসে থাকি শুনে বলল, “আমার তো টেক্সাসে স্থায়ী হওয়ার অনেক শখ! মাসে একবার আমি নিউ ইয়র্ক থেকে টেক্সাস হয়ে ক্যালিফোর্নিয়া যাই ডেলিভারি ট্রাক নিয়ে। যতবার টেক্সাসে যাই, ততবার আফসোস হয়। একদিন সত্যিই ওখানে সেটেল হয়ে যাবো।” কেন তার টেক্সাস এত পছন্দ জিজ্ঞেস করাতে বলল, নিউ ইয়র্ক অনেক ব্যয়বহুল। তুলনায় টেক্সাস দুধভাত। তাছাড়া নিউ ইয়র্কের ঠাণ্ডা তার ভালো লাগে না। কিন্তু টেক্সাসের গরম অনেক আরামদায়ক। এছাড়া নিউ ইয়র্কে সে যে বাড়ী কিনবে বলে পছন্দ করেছে, সেটার দাম পাঁচ লাখ ডলার। একই আয়তনের বাসা টেক্সাসে দেখেছে মাত্র এক লাখ ডলারে। শুনে ছেলেটাকে উৎসাহ দিলাম টেক্সাসে আসার জন্য। কথায় কথায় এও জানালো, আগামী মাসে তার বউ আর দেড় মাসের বাচ্চা আসছে ভারত থেকে। এজন্য সে ভীষণ উত্তেজিত। আমরাও উত্তেজিত হলাম কথাটা শুনে। আহা! কী মধুরই না মিলন হবে সবার।

বিশাল এক ভিক্টোরিয়ান দালানের সামনে নামিয়ে দিতে দিতে পাঞ্জাবী মুন্ডা বলল, “আমি তোমাকে ফাইভ স্টার রেটিং দেবো।” আমিও একই কথা বললাম। তারপর দশ কি পনেরো ধাপ সিঁড়ি বেয়ে উঠলাম সদর দরজার কাছে। পাসওয়ার্ড দিয়ে দরজা খোলার পর আবার পাসওয়ার্ড দিয়ে খুলতে হল আমাদের শোবার ঘরের দরজা। ঘরে ঢুকে হকচকিয়ে গেলাম। আপনারাও চমকিত হন রাণী ভিক্টোরিয়ার আমলের শোবার ঘর দেখে। ড্রেসিং টেবিলের পাশে রাখা মূর্তিটা ধাতব, বাতি জ্বালানোর স্ট্যান্ডে সূক্ষ্ম কারুকাজ, ছাদও কারুকার্যময়, রেডিয়েটরের উপর রাখা ঘড়িটা পর্যন্ত ধাতু দিয়ে গড়া আর সূক্ষ্ম নকশা দিয়ে ভর্তি। সাথে আসবাবগুলো খুবই প্রাচীন। এমন ঠাটবাটের ঘরে ঢুকে আতংকিত হয়ে পড়লাম। এরা সিরিয়াল কিলার নয় তো? ওই যে মুভিতে যেমন দেখায়, সুন্দর ঘরবাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়ে পরে রিচুয়াল করে?

এই ফ্লোরে তিনটা শোবার ঘর। উপরের ফ্লোরে আরও তিনটা। প্রতিটা ফ্লোরের জন্য মাত্র একটা টয়লেট। সেটা ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে হবে। আমরা যখন পৌঁছেছি, তখন সবাই ঘুমিয়ে কাদা। তাই ইচ্ছেমত স্নান সেরে নিলাম। তারপর ফ্রাইড রাইস নিয়ে বসলাম। আনতে আনতে ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। যদিও রান্নাঘরে ওভেন আছে, কিন্তু আলস্যের চোটে গরম করতে যেতে ইচ্ছে করছে না। ঠাণ্ডা খাবার খেয়ে কম্বল জড়িয়ে শুয়ে পড়লাম। তোষকটা আরামদায়ক। শুয়ে পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুম চলে এলো। আগামীকাল সকাল নয়টার মধ্যে আমাদের বেরিয়ে পড়ার কথা। ঠিকমতো ঘুম না হলে ঠ্যালা আছে।


সকাল আটটা নাগাদ আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। প্রিন্স তখনও ঘুমাচ্ছে। ওকে ডাকতে ইচ্ছে করলো না। ভালোমতো ঘুমিয়ে নিক। না হলে সারাদিন শরীর ম্যাজম্যাজ করবে আর মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে থাকবে। বেড়াতে এসে মেজাজ খারাপ হয়ে থাকার মত বিচ্ছিরি জিনিস আর নেই। আমিও আরেকটু ঘুমিয়ে নিতে চেষ্টা করলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে নাক ডাকাও শুরু করে দিলাম। এগারোটার দিকে দ্বিতীয় দফা ঘুম ভাঙার পর দেখি প্রিন্সও উঠে গেছে। অবাক ব্যাপার হল নিউ ইয়র্ক দেখতে যাওয়ার চেয়ে বিছানায় গড়াগড়ি করতেই মজা লাগছে বেশি। গতকালের ধকল কি এখনও সামলে উঠেনি শরীর? কিছুক্ষণ পর বিবেকের তাড়নায় আর থাকতে না পেরে মুখ ধুয়ে, প্রাতঃকৃত্য শেষ করে বাইরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম। রাতে যে ফ্রাইড রাইস খেয়েছি, তার কিছুটা অবশিষ্ট ছিল। সেটা খেয়ে আপাতত পেট পুজো সারলাম। মূল খানাপিনা হবে নিউ ইয়র্কের স্ট্রিট ফুড দিয়ে।

আজ আমাদের তালিকায় আছে সেন্ট্রাল পার্ক, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি আর ব্রুকলিন ব্রিজ। আরও কিছু গন্তব্য ছিল, কিন্তু এখনই বাজে দুপুর একটা। সবকিছু কুলিয়ে উঠতে পারবো না বলে এই তিনটাকে বেছে নিয়েছি। গুগল ম্যাপে দেখাচ্ছে বাসার সামনে থেকে একটা ট্রেন যায় ম্যানহাটনের ১২৫তম স্ট্রিট এবং লেক্সিংটন এভেনিউয়ের সংযোগস্থলে। সেখান থেকে সাবওয়ে ধরে যেতে হবে সেন্ট্রাল পার্কের আশপাশের একটা স্টেশনে। ওখান থেকে খানিকটা হাঁটলেই পার্ক। পুরো সেন্ট্রাল পার্ক আমাদের গন্তব্য নয়, আমরা দেখতে যাচ্ছি দুটো জিনিস। ক্লিওপেট্রা’স নিডল আর শিপ মেডৌ। বাসা থেকে বের হয়ে দশ মিনিট হাঁটার পর একটা স্টেশন পেলাম। একটু পর ট্রেনও চলে এলো। উঠে বসার পর এক অফিসার টিকেট দেখতে এলেন। আমরা মেট্রোকার্ড এগিয়ে দিলাম। অফিসার বললেন, “এই কার্ড ট্রেনে চইলত ন। এটা শুধুমাত্র বাস আর সাবওয়ের জন্য। এখন প্রত্যেকের জন্য তেরো ডলার ফেলো আর মাখ তেল।” মানে! আমাদের মাথায় বাজ পড়লো। তিন স্টেশন পর নামবো, তার জন্য তেরো ডলারের টিকিট? এ তো দিনে দুপুরে ডাকাতি! অফিসার বুঝলেন আমরা নয়া পাগল। দয়াপরবশ হয়ে বললেন, “আচ্ছা লাউকগা। তোমরা সাত টাকা কইরা দাও। এই যাত্রায় তোমাদের মাফ কইরা দিলাম।” আমরা গোল গোল চোখে তাকিয়ে রইলাম। এই না বললি তেরো টাকা? আবার সাত টাকা কোত্থেকে এলো? অফিসার বললেন, “যদি স্টেশন থেইকা টিকিট কিনতা, তাইলে সাত ডলারে পাইতা। কিন্তু ট্রেনের ভিত্রে কাটলে জরিমানাস্বরূপ তেরো ডলার লাগে। কিন্তু তোমাদের কাছ থেকে সাত ডলার করেই রাখতেছি। ভবিষ্যতে আর এই ভুল কইরো না।” ওহ আচ্ছা। অফিসার তো দেখি বেশ মানবিক! গরু ছাগল চড়িয়ে অভ্যস্ত বলে হয়ত বুঝেছে আমরা সত্যিই নাদান। এখন অফিসারকে খুব সুন্দরী মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে এত সুন্দর অফিসার এর আগে দেখিনি।

সতেরো মিনিটের মাথায় ট্রেন আমাদের গন্তব্যে চলে এলো। স্টেশন থেকে বের হয়ে রাজপথে পা দিয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ওহ, ম্যানহাটন! কিশোর বয়সে জেনিফার লোপেজের Maid in Manhattan চলচ্চিত্র দেখে ম্যানহাটনের সাথে পরিচিতি। এরপর কতশত মুভি যে দেখলাম নিউ ইয়র্কের উপর ভিত্তি করে! সম্প্রতি তিমোতে শালামের A Rainy Day in New York ভালো লেগেছিল। তাছাড়া প্রদীপ দেবের লেখা ‘আলবুকারকি থেকে হলিউড’ বই থেকে ম্যানহাটন প্রোজেক্টের কথা পড়েও এই শহরের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়েছিলো। পরে অবশ্য জেনেছি ম্যানহাটন কোনো শহর নয়, নিউ ইয়র্ক শহরের একটা এলাকা বা বরো (borough)।

ম্যানহাটনের সারি সারি দালান দেখতে দেখতে হাঁটা ধরলাম লেক্সিংটন এভেনিউয়ের সাবওয়ে স্টেশনের দিকে। নিউ ইয়র্ক মানেই যেহেতু সাবওয়ে, তাই এই সিস্টেমের প্রতি আমার বেশ আকর্ষণ। গতকাল রাতেই উঠতে চেয়েছিলাম, পারিনি। আজ উঠে কুফা কাটাবো। এখানে আসার আগেই জানতাম সাবওয়ে চেনার উপায় হল মাটির নিচে নামার গর্তের দুই পাশে দুটো গোলাকৃতির ল্যাম্প থাকবে। কিন্তু সেই ল্যাম্প খুঁজে পাওয়াও মুশকিল যদি না আপনি নিউ ইয়র্কের পরিবেশের সাথে অভ্যস্ত থাকেন। চারদিনের ভ্রমণে আমাদের মনে হয়েছে গর্তগুলো বিভিন্ন দালানকোটার সাথে এমনভাবে মিশে থাকে যে, দ্রুত চোখে পড়ার মত নয়। কিন্তু একজন নিউ ইয়র্কার বা নিউ ইয়র্কে ঘুরেফিরে অভ্যস্ত ব্যক্তির কাছে হয়তো এটা কোনো সমস্যাই না। যা হোক, সাবওয়ের সিঁড়ি খুঁজে পেতে বেশিক্ষণ লাগলো না। অন্ধকারাচ্ছন্ন সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামার সময় টের পেলাম গরমের হলকা। এই শহরের সাবওয়ে সিস্টেম বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন যোগাযোগ ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত। ১৯০৪ সালে উদ্বোধিত হওয়া নিউ ইয়র্ক সাবওয়ে সিস্টেমে নাকি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ সাবওয়ে স্টেশন আছে (মোট ৪৭২ টা)। তো, সিস্টেমের প্রাচীনত্বের আভাস পেলাম মাটির নিচে নেমে। দেওয়াল আর সাজসজ্জায় অনেক বছরের পুরনো আবহ। ভেন্টিলেশনও জাতের নয়। প্রচুর মানুষ ছোটাছুটি করছে বলে বদ্ধ পরিবেশে সেটা গরমের উদ্রেক করছে।

সিঁড়ি দিয়ে নামার পর একটা বড় ঘর পড়ে। এখানে অনেক সময় হেল্প ডেস্ক থাকে, অনেক সময় থাকে না। বড় বড় স্টেশনগুলোতে মনে হয় অফিসারদের বসে থাকতে দেখেছি। ছোটোগুলোতে দেখিনি। এই ঘরে একটা গেট থাকে যেটা পার হয়ে আপনি বিভিন্ন ট্রেন স্টেশনে যেতে পারবেন। গেটে কার্ড সোয়াইপ করলে বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে পে করলে গেট খুলবে। এরপর আপনার গন্তব্যে যে ট্রেন যায়, সে ট্রেন কোন স্টেশন থেকে ছাড়ছে সেদিকে যেতে পারবেন। বেশ কিছু কৃষ্ণাঙ্গ ছেলেপিলেকে দেখলাম গেট ডিঙ্গিয়ে একপাশ থেকে আরেক পাশে চলে যাচ্ছে। পুলিশের কাছে ধরা খাওয়ার ভয় নেই নাকি?

(চলবে)

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post স্বপ্নের নিউ ইয়র্ক সিটি – পর্ব ১
Next post স্বপ্নের নিউ ইয়র্ক সিটি – পর্ব ৩