Read Time15 Minute, 11 Second
সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ বাসায় এসে দুটো ভাত খেয়েই বিছানায় লটকে পড়লাম। ঘণ্টা দু’য়েক পর জেগে উঠে মনে পড়লো, “What the hell! Did I just pass my PhD candidacy exam?”
…
গতকাল মানে মার্চ মাসের সাতাশ তারিখ রাতে মেলাটোনিন বড়ি খেয়ে ঘুমিয়েছিলাম। টানা এক সপ্তাহ ধরে ঠিকমত ঘুম হচ্ছে না। যতোটা না ক্যান্ডিডেসি পরীক্ষার চিন্তায়, তারচেয়ে বেশি সামার জব নিশ্চিত করা নিয়ে। আসছে গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টার। খুব করে চাইছি এমন কোনো প্রতিষ্ঠানে সামার জব পেতে যেখানে ভালো পারফর্মেন্স দেখালে ভবিষ্যতে ফুলটাইম চাকরি করার সুযোগ পাবো। বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের রিক্রুটারের সাথে কথাও বলেছি। একটাই সমস্যা, আমি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী। অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে জানি না, তবে পুষ্টিবিজ্ঞানের জগতে (বিশেষ করে ফলিত পুষ্টিবিজ্ঞানে) আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হয়ে ভালোই প্যাঁড়া খাচ্ছি। আমার নজর সরকারী চাকরির দিকে, আর কেন জানি অ্যাপ্লায়েড নিউট্রিশনের সরকারী চাকরিগুলোর জন্য হয় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে অথবা থাকতে হবে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি। আমার কোনোটাই নেই বলে ঝামেলায় আছি। অ্যাডভাইজর সান্ত্বনা দিয়ে বলেছেন সামারে রিসার্চ অ্যাসিস্টেন্টশিপ দেবেন। কিন্তু এর বাইরেও নিজের পছন্দসই একটা জব খুঁজছি। না পেলে আরএ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকব, কী আর করা! তাছাড়া পিএইচডি প্রজেক্টগুলো সময়মত শেষ করে ডিগ্রি নিয়ে বের হতে পারবো কিনা, সে চিন্তা তো আছেই। আগে ভাবতাম পিএইচডি একটা সরলরৈখিক যাত্রা। মানে শুধু গবেষণাই করবো (গবেষণার এবড়ো থেবড়ো রাস্তা হিসেব করেই বলছি), আর করবো chill. কিন্তু এখন দেখি গবেষণার পাশাপাশি আখের গুছানো, এক্সট্রা কারিকুলার একটিভিটিসে অভিজ্ঞতা বাড়ানো, মানুষের সাথে যোগাযোগে দক্ষ হওয়া, অন্যদের গবেষণায় সাহায্য করা ইত্যকার কাজ দিয়ে জীবন ভরা!
…
গতকাল মানে মার্চ মাসের সাতাশ তারিখ রাতে মেলাটোনিন বড়ি খেয়ে ঘুমিয়েছিলাম। টানা এক সপ্তাহ ধরে ঠিকমত ঘুম হচ্ছে না। যতোটা না ক্যান্ডিডেসি পরীক্ষার চিন্তায়, তারচেয়ে বেশি সামার জব নিশ্চিত করা নিয়ে। আসছে গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টার। খুব করে চাইছি এমন কোনো প্রতিষ্ঠানে সামার জব পেতে যেখানে ভালো পারফর্মেন্স দেখালে ভবিষ্যতে ফুলটাইম চাকরি করার সুযোগ পাবো। বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের রিক্রুটারের সাথে কথাও বলেছি। একটাই সমস্যা, আমি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী। অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে জানি না, তবে পুষ্টিবিজ্ঞানের জগতে (বিশেষ করে ফলিত পুষ্টিবিজ্ঞানে) আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হয়ে ভালোই প্যাঁড়া খাচ্ছি। আমার নজর সরকারী চাকরির দিকে, আর কেন জানি অ্যাপ্লায়েড নিউট্রিশনের সরকারী চাকরিগুলোর জন্য হয় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে অথবা থাকতে হবে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি। আমার কোনোটাই নেই বলে ঝামেলায় আছি। অ্যাডভাইজর সান্ত্বনা দিয়ে বলেছেন সামারে রিসার্চ অ্যাসিস্টেন্টশিপ দেবেন। কিন্তু এর বাইরেও নিজের পছন্দসই একটা জব খুঁজছি। না পেলে আরএ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকব, কী আর করা! তাছাড়া পিএইচডি প্রজেক্টগুলো সময়মত শেষ করে ডিগ্রি নিয়ে বের হতে পারবো কিনা, সে চিন্তা তো আছেই। আগে ভাবতাম পিএইচডি একটা সরলরৈখিক যাত্রা। মানে শুধু গবেষণাই করবো (গবেষণার এবড়ো থেবড়ো রাস্তা হিসেব করেই বলছি), আর করবো chill. কিন্তু এখন দেখি গবেষণার পাশাপাশি আখের গুছানো, এক্সট্রা কারিকুলার একটিভিটিসে অভিজ্ঞতা বাড়ানো, মানুষের সাথে যোগাযোগে দক্ষ হওয়া, অন্যদের গবেষণায় সাহায্য করা ইত্যকার কাজ দিয়ে জীবন ভরা!
.
আচ্ছা, লাইনে আসি। কাল রাতে বড়ি খেয়েছিলাম কারণ যদি ঘুমাতে না পারতাম, আজকে আর দেখতে হতো না। আজ পিএইচডি ক্যান্ডিডেসি পরীক্ষার ওরাল প্রেজেন্টেশন দিতে যাবো। আমার ক্যান্ডিডেসি পরীক্ষা দুই ভাগে বিভক্তঃ একটা লিখিত পরীক্ষা (রিটেন এক্সাম), আরেকটা মৌখিক (ওরাল ডিফেন্স)। আমাদের বিভাগে ক্যান্ডিডেসি পরীক্ষার অংশ হিসেবে ওরাল ডিফেন্স দিতেই হবে, তবে লিখিত পরীক্ষা হলো ঐচ্ছিক (optional)। কমিটি মেম্বাররা চাইলে লিখিত পরীক্ষা নিবেন, না চাইলে বাদ দিতে পারেন। আমার ক্ষেত্রে অভাগা যেদিকে চায়, সাগর শুকিয়ে যায় টাইপ অবস্থা হলো। কমিটি সিদ্ধান্ত নিলো দুই ধরনের পরীক্ষাই হবে। তবে একদিক দিয়ে বেঁচে গেলাম। লিখিত পরীক্ষার জন্য চারজন মেম্বার চারটা প্রশ্নপত্র ধরিয়ে দেবেন না। যদিও এটাই সাধারণ প্র্যাকটিস; অন্তত যারা এই পুলসিরাত আগে পার হয়েছে ওদের সাথে কথা বলে দেখেছি, কমিটি মেম্বাররা নিজেদের এক্সপার্ট এরিয়া থেকে প্রশ্ন বানিয়ে সেটা সমাধান করতে দেন। কিন্তু আমার বেলায় অ্যাডভাইজর বললেন ফলিত পুষ্টিবিজ্ঞানে এরকম পরীক্ষার মানে হয় না। ফলিত বা অ্যাপ্লায়েড অর্থ ব্যবহারিক, তাই নয় কি? তাহলে ব্যবহারিক অর্থেই পরীক্ষা নাও! একটা শিক্ষার্থী প্রপোজাল ডেভেলপ করতে পারে কিনা, সেটা দেখো। সে প্রোজেক্ট সফলভাবে শেষ করতে পারে কিনা, সেটা দেখো। পি-ভ্যালু হিসেব করার সূত্র বা আইসোটোপ দিয়ে পুষ্টি উপাদান মাপার পদ্ধতি দিয়ে তো ফলিত পুষ্টিবিজ্ঞানের পিএইচডি শিক্ষার্থীর দক্ষতা বা জ্ঞান যাচাই করা উচিৎ হবে না! এই কথা শোনার পর আমি আমার অ্যাডভাইজরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে গেলাম। লোকটার সাথে যতোই মতভেদ থাকুক, এই একটা জায়গায় তাকে একশত ভাগ সমর্থন করলাম। শেষমেশ দাঁড়ালো, আমি আমার পিএইচডি প্রোজেক্টের বাইরে গিয়ে একটা ব্র্যান্ড নিউ প্রোজেক্টের প্রপোজাল ডেভেলপ করবো। সেটা হতে হবে National Institutes of Health-এর R21 গ্র্যান্ট প্রপোজালের ফরম্যাট অনুযায়ী।
.
আমি এমন এক মানুষ যার কোনো ফেডারেল গ্র্যান্ট প্রপোজাল দাঁড় করানোর অভিজ্ঞতা নেই। টেক্সাস এঅ্যান্ডএমের একটা অভ্যন্তরীণ ফান্ডের জন্য কষ্টে সৃষ্টে একটা গ্র্যান্ট লিখেছিলাম গত বছর যেটা ফেল মেরেছিলো (মানে একসেপ্টেড হয়নি)। এর বাইরে আর কিছুই জানি না। R21 কী, খায় না মাথায় দেয়, এর ফরম্যাট কেমন, এসব হাবিজাবি জানা তো দূরের কথা। সেই আমি মাস তিনেক ধরে একটু একটু করে তথ্য সংগ্রহ করে একটা প্রপোজাল দাঁড় করিয়ে ফেললাম। অসংখ্য কাটাকুটি চললো খসড়ায়, অসংখ্যবার মেথড বদলালো। শেষে যখন মোটামুটি সন্তুষ্ট হলাম, মানে ঘষামাজা করতে করতে প্রপোজালের উপর থেকে মন উঠে গেলো, তখন বুঝলাম আমি প্রস্তুত এটা সাবমিট করার জন্য। তাই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মৌখিক পরীক্ষার সপ্তাহ দু’য়েক আগে গবেষণা প্রস্তাবনাটা পাঠিয়ে দিলাম পিএইচডি কমিটির কাছে। উনারা সেটা পড়ে আমাকে কাবাব বানানোর জন্য রেডি হয়ে আসবেন আজকে।
.
আগেই বলেছি টানা কয়েকদিন ধরে ঘুম হচ্ছে না। আজও যদি ঠিকঠাক না ঘুমানোর কারণে মাথা কাজ না করে, তাহলে প্রেজেন্টেশনের সময় জানা জিনিসও ভুল করবো। তাই বড়ি খেয়েছিলাম। খেয়ে সারারাত ঘুম হয়েছে ঠিকই, ছাড়া ছাড়া ভাবে। সকালের দিকে ঠেলে ঘুম এলো। অথচ তখন ঘুমানোর সুযোগ নেই। জোর করে উঠে বিশাল এক মগ কফি নিয়ে গবেষণা প্রস্তাবনায় শেষ মুহূর্তের চোখ বুলাতে বসলাম। দুই সপ্তাহ আগে প্রপোজালটা পাঠানোর পর থেকে আজ পর্যন্ত যে পরিমাণ চিন্তা করেছি মেথড নিয়ে, এত চিন্তা প্রপোজাল ডেভেলপের সময় মাথায় আসেনি। চিন্তা আসার সাথে সাথে সেগুলো টুকে রেখেছি খাতায়, পাছে এগুলো নিয়েই কেউ প্রশ্ন করে! করলে বলবো, “কি জানো, বিষয়টা নিয়ে আমিও চিন্তা করেছি…।”
.
ঘণ্টা তিনেক প্রপোজাল, টুকে রাখা নোট আর পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইডে চোখ বুলিয়ে রেডি হলাম আন্ডারগ্র্যাডের ছেলেমেয়েদের ক্লাস নেওয়ার জন্য। হ্যাঁ, আজকে এই প্যাঁড়াও আছে। পৌনে একটায় ক্লাস। গেলাম সেখানে, দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্লাস নিলাম। এরপর গেলাম আমার ডিপার্টমেন্টে। কিছুক্ষণ পর এখানেই শুরু হবে আমার ওরাল এক্সাম।
.
দুপুর তিনটায় পরীক্ষা। ঠিক তিনটায় আমার পিএইচডি কমিটির চারজন সদস্য জড়ো হয়ে বললেন, “রুথ, তুমি দশ মিনিটের জন্য বাইরে থেকে ঘুরে আসো। আমরা একটু কথা বলে নিই।” আমি বিস্মিত। প্রেজেন্টেশন দেখার আগেই কী নিয়ে আলোচনা করে মানুষ? আমার মনের কথা বুঝে হয়তো একজন বললেন, “তুমি যে প্রপোজাল পাঠিয়েছ, সেটা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবো।” ভালো। গেলাম বাইরে। ওয়েটিং লাউঞ্জে বসে ক্যান্ডি ক্রাশ খেলা শুরু করলাম। এই দশ মিনিটের জন্য কোনোকিছু রিভিশন দিয়ে মাথা গরম করতে চাচ্ছিলাম না। দশ মিনিট পর অ্যাডভাইজর এসে হাসিমুখে বললেন, “চলো, শুরু করো।” উনার হাসি মুখ দেখে মনে হলো, আলোচনা খারাপ দিকে যায়নি।
.
আমি পঁচিশ মিনিটের একটা প্রেজেন্টেশন বানিয়েছি। চেষ্টা করেছিলাম বিশ মিনিটে আয়ত্ব করার, পারিনি। ইংরেজি আমার প্রথম ভাষা হলে পারতাম। যা হোক, সারাদিনের মানসিক ধকলে আমি ক্লান্ত। রুচি আসেনি বলে কিছু খাইওনি। এমন অবস্থায় প্রেজেন্টেশন শুরু করে হড়হড় করে একের পর এক স্লাইড বুঝিয়ে ঠিক পঁচিশ মিনিট পাঁচ সেকেন্ডে থামলাম। ‘রোলার কোস্টার রাইড’ একেই বলে। এরপর শুরু হলো প্রশ্নোত্তর পর্ব।
.
আগেই অ্যাডভাইজর বলে রেখেছিলেন তিন থেকে চার রাউন্ড প্রশ্ন চলতে পারে। আমি ভেবেছিলাম এ আর এমন কী? আমার কোনো ধারণাই ছিল না একটা রাউন্ডে কয়টা প্রশ্ন থাকতে পারে, কতক্ষণ লাগতে পারে। যদিও প্রথমে ঠিক হয়েছিলো একজন একজন করে কমিটি মেম্বার তাদের প্রশ্ন শেষ করবেন, কিন্তু একটু পর দেখি সেটা গুবলেট হয়ে সবাই একসঙ্গে প্রশ্ন করা শুরু করেছেন। একজন একটা প্রশ্ন করলে ওটার পিঠে আরেকজন প্রশ্ন করে বসেন। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আমার জ্ঞান আর বুঝে যতটুকু কুলোয়, উত্তর দিতে। বাঁচোয়া যে, প্রশ্নগুলো মুখস্ত জ্ঞান যাচাইয়ের জন্য নয়। মুখস্ত করলে আমার কিছুই মনে থাকে না। তাই মুখস্ত জ্ঞান যাচাইয়ের জন্য প্রশ্ন করলে আমি নির্ঘাত ফেইল।
.
সবাই যাচাই করছেন রিসার্চ টপিক এবং মেথডে আমার আন্ডারস্ট্যান্ডিং কতোটা এবং আমি ক্রিটিকেলি চিন্তা করে উনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছি কিনা। হতভম্ব হয়ে খেয়াল করলাম, মেথড নিয়ে এত চিন্তা করার পরও আরও কতো দৃষ্টিকোণ থেকে যে চিন্তা করা বাদ পড়েছে! কমিটি মেম্বাররা একের পর এক প্রশ্ন করেন আর আমি ভাবি, “এইশশালা! এই ব্যাপারে চিন্তা না করে আমি প্রপোজাল লিখলাম কীভাবে?” কতো যে রংঢং একটা প্রপোজালের! কতো দিকে যে লক্ষ্য রাখতে হয় ডেভেলপমেন্ট করতে গিয়ে! তারপরও প্রশ্নোত্তর পর্বে এসে বুঝতে পারছি অনেক দিক নিয়ে আমি চিন্তা করিনি। তবে সব দিকই যে আমার প্রস্তাবনার পরিসরে পড়ে, এমনটাও নয়। বেশ কিছু প্রশ্ন এলো যেগুলো প্রপোজালের সীমানা পেরিয়ে আরও দুই গ্রাম দূরের বিষয়। প্রথম দুই একটার উত্তর ঠাণ্ডা মাথায় দিলাম। এরপর যখন দেখি স্কোপের বাইরের বিষয় নিয়েই সবাই ত্যানা প্যাঁচানো শুরু করেছেন, মাথা গরম হয়ে গেলো। একজনকে উত্তর দিলাম কিছুটা উষ্ণ স্বরে। তারপরই মনে হলো, “কন্ট্রোল, উদয়, কন্ট্রোল!” অবস্থা দেখে অ্যাডভাইজর মাঠে নেমে পড়লেন। আমাকে সমর্থন দিয়ে একটা বক্তব্য ঝাড়লেন। তারপর রাউন্ড শুরু হলো আরেক টপিক নিয়ে।
.
আমি ভেবেছিলাম এত বেলা করে সবাই আসবে, সারাদিনের ক্লান্তি থাকবে চোখেমুখে, হয়তো তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেবে। কিন্তু না, এক ঘণ্টা বিশ মিনিট ধরে খালি প্রশ্নোত্তর পর্ব চললো। পুরো সময় আমি দাঁড়িয়ে। পা ব্যথায় টনটন করছে, ভালো ঘুম হয়নি বলে শরীরও ম্যাজম্যাজ করছে। আরেকটু হলে বোধহয় ধড়াম করে পড়েই যেতাম। ঠিক সময়ে অ্যাডভাইজর বলে বসলেন, “পাঁচটা বাজতে পনেরো মিনিট বাকি। এইবেলা ক্ষান্ত দেওয়া দরকার।” তারপর আবার আমাকে ভাগিয়ে দিলেন।
.
বাইরে এসে প্রিন্সকে কল দিয়ে অভিজ্ঞতা বলছি দশ মিনিটও হয়নি, অ্যাডভাইজর ডাকতে এলেন। অবাক হয়ে বললাম, “এত তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেলো?” অ্যাডভাইজর হাসলেন। আমাকে রুমে ঢুকিয়ে সবার সামনে বললেন, “রুথ, তুমি দারুণ করেছ। You have passed your candidacy exam, congratulations!” এরপর কী বললেন জানি না। আমি দুই হাত উপরে তুলে চিৎকার দিলাম, “ইয়েই! I am so happy for me.” সবার দাঁত বের হয়ে গেলো।
.
আজ থেকে আমি পিএইচডি ক্যান্ডিডেট। প্রশ্ন হলো, এটা হতে গিয়েই যদি এত প্যাঁড়া, what the hell is PhD defense?