0 0
Read Time18 Minute, 28 Second

                                                                          দ্বিতীয় পর্ব

প্রথম পর্ব এখানে

২০১৮ সালের ফল এবং ২০১৯ সালের স্প্রিং সেশনের জন্য চেষ্টা

২০১৬-এর ফলেও সালেও যখন হল না, বেশ কয়েকমাস হতাশ হয়ে বসেছিলাম। তারপর আবার আটঘাট বেঁধে নেমে পড়লাম ফল ২০১৭-এর যাত্রায়। এবার নতুন করে GRE পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রইলাম। ৩০২ হয়তো অন্য আবেদনকারীদের তুলনায় খুবই কম স্কোর। তাছাড়া আমার গবেষণা অভিজ্ঞতা খুব একটা নেই বলে GRE-তে ভালো স্কোর উঠানো আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ২০১৬ সালের মে মাসের দিকে এসে লেখাপড়া পুরো বাদ দিয়ে দিলাম। কোনো আগ্রহই পাই না, খালি হতাশ লাগে। আত্মবিশ্বাস তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। HSA গ্রুপে গিয়ে সবার আপডেট দেখে ইচ্ছাশক্তি চাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতাম, কিন্তু পারতাম না। ফলাফল, ফল ২০১৭-এর জন্য কোন প্রফেসরের সাথে যোগাযোগও করলাম না, কোথাও এপ্লাইও করলাম না। পুরো একটা বছর (২০১৬) বাতিল হয়ে গেলো। এর মধ্যে বিয়ে করলাম আর নতুন জীবনে প্রবেশ করে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো আমার স্বপ্ন। হাজব্যান্ড প্রচণ্ড উৎসাহ যোগালেন এবং আমিও নতুন করে সবকিছু আরম্ভ করলাম। GRE-এর মেয়াদ এখনো আছে। কিন্তু IELTS-এর শেষ বলে নতুন করে পরীক্ষা দিলাম। স্কোর বেশ ভালো এলো (৭.৫)। কয়েকজন প্রফেসরকে নক দিলাম ফল ২০১৮-এর জন্য। নতুন করে মেইল ফরম্যাট তৈরি করলাম। এটা হল আগেরগুলোর চেয়েও ছোট কিন্তু অর্থবহ। আগের বছরগুলোয় যে Statement of Purpose (SOP) নিয়ে দৌড়েছিলাম, মনে হল সেটায় খামতি আছে। তাই নতুন করে দুই মাস লাগিয়ে আরেকটা SOP তৈরি করলাম যেটা আগেরটার চেয়েও মানসম্মত হল। CV-কেও নতুনভাবে সাজালাম। মোট কথা, আগেরবারের কিছুই রাখিনি। মনে হচ্ছিলো, ওগুলো অ্যাডমিশন কমিটিকে মুগ্ধ করতে পারছে না।

প্রফেসরদের কাছ থেকে পজিটিভ রিপ্লাই পেলাম খুব কম। কিন্তু ঠিক করলাম, রিপ্লাই পাই বা না পাই, আমি প্রোফাইল অনুযায়ী ৫-৬ ভার্সিটিতে এপ্লাই করবো। সে অনুযায়ী ছয়টা ভার্সিটি বাছাই করে এপ্লিকেশন পূরণ করা আরম্ভ করলাম। শেষ পর্যন্ত অবশ্য দুইটা বাদ পড়লো। চারটায় এপ্লাই করলাম। কোনো ভার্সিটি হয়ত ট্রান্সক্রিপ্ট, IELTS সবকিছুরই অফিসিয়াল কপি চায়, কেউ আনঅফিসিয়াল দিয়েই এপ্লিকেশন রিভিউ করে। কেউ আবার ট্রান্সক্রিপ্টের পাশাপাশি WES-ও চায়। মোট কথা, খরচের কোনো স্ট্যান্ডার্ড নেই। এর মধ্যে ক্যানসাস স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর আগ্রহ দেখালেন। বললেন ফল সেশনে এপ্লাই করতে এবং উনার নাম SOP-তে দিতে। কিন্তু নানা কারণে আমি ফলের ডেডলাইন মিস করলাম। স্প্রিং ২০১৯-এ আবেদন করলে প্রফেসরের নাম দিতে পারবো কিনা জানতে চাইলাম। উনি বললেন, অবশ্যই। এর মধ্যে আমি একই অনুষদের দ্বিতীয় একজন প্রফেসরের সাথে যোগাযোগ করেও পজিটিভ রিপ্লাই পেয়েছিলাম। পার্সোনাল স্টেটমেন্টে দুজনের নামই দিলাম। এরপর এপ্লিকেশন সাবমিট করে দুজনকে জানালাম। দ্বিতীয়জন আমাকে বললেন, তিনি আমার এপ্লিকেশন দেখেছেন এবং আমার মেজর এডভাইজর হিসেবে কাজ করতে রাজী আছেন। কিন্তু সমস্যা হল, উনি আমাকে এই মুহূর্তে গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ এসিস্টেন্টশিপ দিতে পারবেন না। নতুন একজন গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্টকে সাপোর্ট করার মত ফান্ড উনার হাতে নেই। তাই উনি আমাকে ডিপার্টমেন্টে রেকমেন্ড করেছেন গ্র্যাজুয়েট টিচিং এসিস্টেন্টশিপের (GTA) জন্য। আমি ডিপার্টমেন্ট হেডকে মেইল দিলাম GTA-এর জন্য আবেদন জানিয়ে। কিন্তু গ্র্যাড কোঅর্ডি‌নেটর বললেন, এই মুহূর্তে স্প্রিংয়ের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। ফল শেষ হোক, এরপর স্প্রিংয়ে GTA নেওয়া হবে কিনা, সেটা জানানো হবে। আবার আশা হারাতে শুরু করলাম। ইতোমধ্যে ক্যানসাস স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাডমিশন চলে এলো, সেখানে মেজর অ্যাডভাইজর হিসেবে প্রথম প্রফেসরের নাম আছে, অথচ ফান্ডের দেখা নেই। এবারও কি তাহলে হাত ফসকে যাচ্ছে সুযোগ? প্রফেসরকে জিজ্ঞেস করলাম উনার ল্যাবে GRA হিসেবে ঢুকার সুযোগ আছে কিনা, বা অনুষদে GTA হিসেবে? উনি বললেন, এই মুহূর্তে উনার হাতে কোনো সুযোগ নেই আমাকে দেওয়ার মত। তবে উনি আশায় আছেন, স্প্রিংয়ের মধ্যে ফান্ড পেয়ে যাবেন। তখন আমাকে দিতে পারবেন। আমি একটু হলেও আশা পেলাম।

যখন ক্যানসাসে এতকিছু ঘটে চলছে, তখন ইউনিভার্সিটি অ্যালাবামা অ্যাট বারমিংহাম আর ইউনিভার্সিটি অফ নেব্রাস্কা-লিংকন থেকে রিজেকশন লেটার আসলো। অপেক্ষায় আছি সেন্ট লুইস ইউনিভার্সিটি থেকে সিদ্ধান্ত আসার। SLU-তে এপ্লিকেশন সাবমিট করার প্রায়োরিটি ডেডলাইন ছিল মার্চের ৩০ তারিখ। আমি ডেডলাইনের ভেতর এপ্লিকেশন জমা দিয়েছি বটে, কিন্তু একজন ম্যাডামের কাছ থেকে তখনও রিকমেন্ডেশন লেটার যোগাড় করা বাকি। যেহেতু উনি লিংকে ঢুকে লেটার লেখার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, তাই আমার রিকোমেন্ডার বদলেরও সুযোগ নেই। একজন শিক্ষককে আপনি সপ্তাহে দুইবার পুশ করলেও সেটা খারাপ দেখায়। কিন্তু আমার তখন মাথার ঘায়ে কুত্তা পাগল অবস্থা। অপমানিত হবার সম্ভাবনা আছে জেনেও আমি ক্রমাগত ম্যাডামকে রিমাইন্ডার দিতে লাগলাম। উনি ডেডলাইন পার হবার পর আমাকে বললেন, উনার অনলাইন লিংক কাজ করছে না। লেটার সাবমিট করা যাচ্ছে না। অবশ্য আমি একটা সোর্স থেকে জেনেছিলাম যে, ডেডলাইনের ভেতর এপ্লিকেশন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে সাপোর্টিভ ডকুমেন্ট ডেডলাইনের পরেও জমা দেয়া যায়। সেজন্য আশায় বুক বেঁধে গ্র্যাড কোঅর্ডি‌নেটরকে জিজ্ঞেস করলাম, আমার প্রফেসর যদি সরাসরি ইমেইলের মাধ্যমে রিকমেন্ডেশন লেটার পাঠান, উনারা একসেপ্ট করবেন কিনা? বললেন, হ্যাঁ করবেন যদি প্রফেসর উনার ইন্সটিটিউশনাল আইডি থেকে মেইল দেন। কিন্তু পাঠকেরা জানেন যে, আমাদের দেশে প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল এড্রেস খোলার ব্যাপারটা খুব একটা প্রসার পায়নি। ফলে আমার প্রফেসরেরও তেমন আইডি নেই। আমি ‘যা থাকে কপালে’ ভেবে প্রফেসরের ব্যক্তিগত আইডি থেকেই মেইল পাঠাতে অনুরোধ করলাম। এপ্রিলের ৩ তারিখে প্রফেসর জানালেন, তিনি SLU-তে মেইল পাঠিয়েছেন এবং তারা কনফার্ম করেছে যে, ঐ লেটার আমার এপ্লিকেশনের সাথে যুক্ত করা হয়েছে।

কিন্তু কাহিনী মে টুইস্ট আভি বাকি হ্যাঁয়! এপ্রিলের ৫ তারিখে SLU থেকে মেইল এলো, তিন নম্বর রিকোমেন্ডেশন লেটারের অভাবে আমার এপ্লিকেশন অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। রিভিউ করার যোগ্য হবার জন্য আমাকে তৃতীয় লেটারটা যোগাড় করতে হবে। মাথায় ডাবল বাজ পড়লো। মানে কী? সাথে সাথে উত্তর দিলাম, আমার প্রফেসর অমুক তারিখে লেটার পাঠিয়েছেন এবং উনাকে কনফার্মও করা হয়েছে। কিন্তু SLU থেকে বলল, তারা লেটারটা খুঁজে পাচ্ছে না। প্রফেসর যদি আরেকবার পাঠান, ভালো হয়। চিন্তা করুন! প্রফেসরের কাছ থেকে ঐ লেটার যোগাড় করতেই আমার কালো ঘাম ছুটে গেছে। সেই পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে আবারও যেতে হবে? ধুকপুক বুকে ম্যাডামকে নক দিলাম। চোখে জল এসে যাচ্ছে ভয়ে। কী না কী শুনতে হবে! কিন্তু নাহ, ম্যাডাম বকাঝকা করলেন না। বললেন, তিনি দেশের বাইরে আছেন, দেশে এসে লেটার দিবেন। এপ্রিলের ১৯ তারিখে SLU থেকে আবারও মেইল এলো লেটার চেয়ে। ম্যাডামকে আবার নক দিলাম। উনি পারিবারিক ঝামেলার ভেতরে আছেন বলে আমাকে উত্তর দিলেন না। আবার নক দিলাম ২৬ তারিখে। উনি মে মাসের চার তারিখে আবারও লেটার পাঠালেন গ্র্যাজুয়েট অফিস বরাবর। এবার আর মিস হল না। অফিস আমার এপ্লিকেশনে লেটারটা যুক্ত করে দিলো। এরপর আমার অপেক্ষা শুরু হল ভর্তির সিদ্ধান্ত পাওয়ার ব্যাপারে। এত দেরি হয়েছে রিকোমেন্ডেশন লেটারের জন্য, রিজেকশন ছাড়া তো কিছু পাবো না। তবুও মানুষ আশায় বাঁচে। আর সবসময় মানুষ আশাহত হয় না। যেমন মে মাসের ২১ তারিখে আমি অ্যাডমিশনের মেইল পেলাম। টুইস্ট হল, যে মেজর নিয়ে আমি পড়তে চেয়েছিলাম, সে মেজরে নয়, বরং অ্যাডমিশন হল আরেক মেজরে। অবশ্য দুটো মেজরই কাছাকাছি। কাঙ্ক্ষিত মেজরে অ্যাডমিশন হয়নি কারণ WES থেকে মূল্যায়িত ট্রান্সক্রিপ্ট ভার্সিটির হাতে পৌঁছায়নি। ঐ ট্রান্সক্রিপ্ট ছাড়া তারা আমাকে ঐ মেজরে নিতে পারছে না। আশ্চর্য হয়ে নক দিলাম WES-কে। কারণ আমি সেই ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের কাছে অর্ডার দিয়েছি ডুপ্লিকেট রিপোর্টের। তিন মাসেও ভার্সিটিতে রিপোর্ট পৌঁছায়নি, ব্যাপারটা গোলমেলে। কিন্তু WES আমাকে জানালো, তারা ফেব্রুয়ারির ২৬ তারিখেই রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছে। কী মুশকিল!

যা হোক, এরপরই আমি গ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্টেন্টশিপের অফার পেলাম। অফার গ্রহণ করতে রাজি আছি কিনা সেটা জানানোর জন্য একটা এক্সেপ্টেন্স লেটারে সাইন করতে হল। এরপর সেটা স্ক্যান করে পাঠাতে হল ডিপার্টমেন্টের চেয়ার বরাবর। এরপর SLU থেকে আমাকে একটা স্টুডেন্ট আইডি দেওয়া হল এবং আমার নামে স্টুডেন্ট ইমেইল আইডি খোলা হল। অর্থাৎ তারা আমাকে একজন স্টুডেন্ট হিসেবে গণ্য করা শুরু করে দিয়েছে। দেশে যে সুবিধাটা কখনই পাইনি, সেই ইন্সটিটিউশনাল ইমেইল আইডি আমি SLU থেকে পেলাম। এই আইডিতে ঢুকে অফিসিয়ালি আমাকে জানাতে হল, আমি অ্যাসিস্টেন্টশিপ কন্ট্রাক্ট গ্রহণ করতে রাজি আছি। এরপর ভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল অফিস আমার I-20 তৈরি করা শুরু করল। I-20 পেলাম জুনের ৩০ তারিখে। সেখানে লেখা, গ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে আমার কন্ট্রাক্ট শুরু হবে আগস্টের ১৫ তারিখ থেকে। আমি যদি সঠিক সময়ে মাসিক স্টাইপেন্ড পেতে চাই, আমাকে সোশাল সিকিউরিটি নাম্বার (SSN) তৈরি করতে হবে। এজন্য আমাকে ১৫ তারিখের আগে আমেরিকায় পৌঁছে ভার্সিটির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। কী অবস্থা! দৌড় দিলাম বিমানের টিকেট বুক করার জন্য। ভিসা ইন্টার্ভিউ দেওয়ার আগে বিমানের টিকেট বুক করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কিন্তু আমি যদি এই মুহূর্তে বুক না করি, তাহলে টিকেটের দাম যেমন নাগালের বাইরে চলে যাবে, টিকেট নাও পাওয়া যেতে পারে।

জুলাইয়ের ২ তারিখে ট্র্যাভেল এজেন্সির অফিসে বসে আমি আর আমার হাজবেন্ড ঘামছি। কারণ ১০ই থেকে ১৩ই আগস্টের ভেতর সস্তা ফ্লাইট তো দূরে থাক, ফ্লাইটই পাচ্ছে না কেউ। আমরা টাইম-টেবিল পাল্টে ৭-১০ তারিখের ভেতর খুঁজতে বললাম। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ৮ তারিখে ইতিহাদ এয়ারলাইন্সের একটা ফ্লাইট পাওয়া গেল যেটা সেন্ট লুইস সিটির ল্যাম্বার্ট আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট পর্যন্ত যাবে। টিকেটের দাম ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা। কী আর করা! বুক করে ফেললাম। এটাই সবচেয়ে নিরাপদ সিদ্ধান্ত ছিল। আমি যদি ওই মুহূর্তে ১ লাখ ১৮ হাজার দিয়ে বুক না করি, তাহলে দুইদিন পরই সে টিকেটের দাম ১ লাখ ৩০ হয়ে যাবে। এভাবে প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়তে বাড়তে দেড় লাখ থেকে দুই লাখ পর্যন্ত উঠাও অস্বাভাবিক কিছু না। সে তুলনায় ভিসা রিজেক্টেড হলে ১৪০ ডলার ক্যান্সেলেশন ফি (১২০০০/-) দিয়ে টিকেট বাতিল করে ফেলব। এরপর পূরণ করলাম DS-160 ফর্ম, জমা দিলাম সেভিস ফি। ভিসা ফি জমা দিয়ে জুলাইয়ের ৩ তারিখে ওয়েবসাইটে ঢুকলাম ভিসা ইন্টার্ভিউ স্কেজিউল করতে। দেখি, জুলাইয়ের ১৭ তারিখের আগে ভিসা ইন্টার্ভিউয়ের কোনো স্কেজিউল নেই। যদি ভিসা রিজেক্টেড হয়, তাহলে দ্বিতীয়বার দাঁড়ানোর জন্য হাতে সময় থাকবে কিনা, সেটা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমার সবকিছুই এত টাইট অবস্থায় যে, আগুপিছু চিন্তা করার মত পরিস্থিতি ছিল না। রিজেক্ট হলে সেটা পরে দেখা যাবে ভেবে জুলাইয়ের ১৭ তারিখ সকাল ৮ টায় স্কেজিউল করে ফেললাম ইন্টার্ভিউ ডেট। আমার ইচ্ছা ছিল দিনের একদম প্রথম স্লট অর্থাৎ সকাল সাতটায় স্কেজিউল করা। কিন্তু এই স্লট খালি নেই। সবাই নিয়ে নিয়েছে। তারপরও প্রতিদিন একবার করে ঢুঁ মারতাম ওয়েবসাইটে, সকাল সাতটার স্লট খালি হল কিনা সেটা দেখতে। হলে আমি রিস্কেজিউল করব। চারদিন পর দেখলাম তিনটা স্লট খালি হয়েছে। সাথে সাথে রিস্কেজিউল করে ফেললাম। সকালে গেলে আমাদের মাথা, ভিসা অফিসারের মাথা, সবার মাথা ঠাণ্ডা থাকবে। লাইন কম হবে, কম সময় বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে, মাথার উপর কোমল রোদ থাকবে, দ্রুত কাজ শেষ হবে।

এরপরের কাহিনী সংক্ষিপ্ত। ভিসা হাতে পেলাম, উড়াল দিলাম, বাংলাদেশ ছাড়লাম, আমেরিকায় পা দিলাম। শেষ হল পাঁচ বছর ব্যাপী একটানা সংগ্রাম। জানি, সামনে আরও বড় সংগ্রাম অপেক্ষা করছে। গ্র্যাজুয়েট লাইফের সংগ্রাম। কিন্তু যে সংগ্রাম পার করে এসেছি, সেটা আমাকে অনেকখানি তৈরি করে দিয়েছে। আশা করি ভবিষ্যতের সংগ্রাম খুব একটা কাবু করতে পারবে না।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
100 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post স্বপ্ন হল সত্যি! (পর্ব ১)
সেন্ট লুইস বিশ্ববিদ্যালয় Next post যুক্তরাষ্ট্রে স্নাতকোত্তর জীবনের দুই বছর (পর্ব ১)